আজাদ  লাশ হয়ে বাড়ি  ফিরলো , পরিবারে চলছে শোকের মাতম

আজাদ লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলো , পরিবারে চলছে শোকের মাতম

Social Share Now
শরীয়তপুর প্রতিনিধি ঃ রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় গতকাল রোববার দুপুরে মেট্রোরেলের বেয়ারিং প্যাড খুলে ঘটনাস্থলেই নিহত শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠী গ্রামের আবুল কালাম আজাদ (৩৬) এর মরদেহ সোমবার সকালে বাড়ি আনার পর এ হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। কেউ যেন এ মৃত্যু মেনে নিতে পারছেনা। লাশ বাড়ি ফেরার পর নিহত আবুল কালাম আজাদের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে। এর আগে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামের মোক্তারের চর পূর্বপোড়াগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে সকাল ৯টায় দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে আমাদের শরীয়তপুর প্রতিনিধি মোঃ আবুল হোসেন সরদারের পাঠানো তথ্য ও ভিডিও চিত্রের ভিত্তিতে একটি ডেক্স রিপোর্ট \
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় গতকাল রোববার দুপুরে মেট্রোরেলের বেয়ারিং প্যাড খুলে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছিল শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠী গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল চোকদারের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৩৬) নামের এক যুবক। ময়নাতদন্ত শেষে রোববার রাত অনুমান ৩টায় মরদেহ গ্রামের বাড়ি পৌছানোর পর এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। পরিবারের লোকজন সহ পাড়া প্রতিবেশী হাজার হাজার মানুষ এক নজর দেখার জন্য
সেখানে ভিড় জমায়। আতœীয় স্বজন ও স্ত্রীর আহাজারিতে আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে ওঠে। কেউ যেন চোখের পানি আটকে রাখতে পারেনি।সোমবার সকাল ৯ টায় তার গ্রামের বাড়ির পাশে মোক্তারেরচর পূর্ব পোড়াগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইমরুল হাসানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনের লোকজন ও আইন শৃংখলা বাহিনী আগে থেকেই সেখানে হাজির হয়। সকলেই যেন পরিবারের লোকজনদের শান্তনা দিতে নিজ্ইে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এক কথায় আবুল কালামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্বজনরা কেউ যেন মেনে নিতে পারছেনা এ অকাল মৃত্যুকে। গতকাল রোববার বেলা ১১ টায় তার ভাবী আসমা বেগমের সাথে শেষ কথা হয় আবুল কালামের । অতি শীঘ্রই বাড়ি ফিরে দেখা করবেন সকলের সাথে। তবে সেই বাড়ি ফেরা হলো লাশ হয়ে। চার ভাইয়ের মধ্যে আবুল কালাম ছিলেন সবার ছোট । স্ত্রী ও দুই শিশু সস্তান নিয়ে বসবাস করতেন নারায়ণগঞ্জের পাঠানতলি এলাকায়। ঢাকায় তিনি একটি ট্রাভেল এজেন্সির চাকুরী করতেন। তার আয়ের একটি অংশ গ্রামের বাড়িতে পাঠাতেন ভাইদের জন্য। রোববার বেলা ১২ টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় যাওয়ার সময় মেট্রোরেলের বেয়ারিং প্যাড খুলে তার উপর পড়লে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার নিহতের খবর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে এলাকাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। তার এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের স্বজনরা।
এ দিকে ঘটনার পর খবর পেয়ে যোগাযোগ উপদেষ্টা মোঃ ফয়জুল কবীর ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা সহায়তা ও পরিবারের যোগ্য লোককে চাকুরী দেয়ার ঘোষনা দেন।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায্য বিচার চায় পরিবার। যাতে করে কারো দায়িত্বের অবহেলার জন্য আর যেন কারো জীবন অকালে চলে না যায়।
রড় ভাই খোকন চোকদার বলেন, আমার উপার্জনক্ষম নিরপরাধ ভাইটি কারা দায়িত্বেও অবহেলার জন্য মর্মান্তিক ভাবে মারাগেছে। আমরা এর সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচার চাই।
নড়িয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) লাকি দাস বলেন, এ দুর্ঘটনার জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। পাশাপাশি সরকারের উচ্চমহল এ বিষেয়ে পরিবারের জন্য সকল ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদেও জেলা প্রশাসন এ বিয়ে সার্বিক সহায়তা করবেন।।

Leave a Reply