গোসাইরহাট পৌরসভায় ১৩ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ
গোসাইরহাট পৌরসভায় ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের অভিযোগ ওঠেছে উক্ত পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল আউয়াল সরদার ও পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আলীম মোল্লা ও হিসাব রক্ষক অমরেশ কুমারের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগি মাসুদ মিয়া ও জয়নাল আবেদীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ পত্র দখিল করেছে। ্এ বিষয়টি সরেজমিন তদন্তের জন্য শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়। ইেিতামধ্যে তদন্ত শেষ কওে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত তদন্তের ফলাফল জানা যায়নি।
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই গোসাইরহাট পৌরসভা নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও ভোট কারচুপির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ্আব্দুল আওয়াল সরদার মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর থেকে পৌরসভায় লুটপাট, টেন্ডার বাণিজ্য ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে মেয়র আব্দুল আউয়ালের বিরুদ্ধে। পৌরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলরদের বিরোধিতা সত্বে ও চলতি বছরের ২৪ জুন তারিখে পৌরসভার ইক্সাকার,সহকারী এ্যাসেসর,সহকারী কর আদায়কারী, কোষাধ্যক্ষ,স্টোরকিপার, ন্মিমান সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক,স্বাস্থ্য সহকারী, সুপারভাইজার, টিকাদান(পুরুষ) ও (মহিলা), বিদ্যুৎ মিস্ত্রি পদে ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। তখন অভিযোগ ওঠে, সাবেক মেয়র আব্দুল আউয়াল সরদার, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আলীম মোল্লা ও হিসাব রক্ষক অমরেশ কুমার পরস্পর যোগসাজশে কোন কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে ১৮ লাখ থেকে ২৪ লাখ টাকা করে ঘুষ গ্রহণ করে তাদেরকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করেন, যাদের কাছ থেকে চাকুরি দেয়ার জন্য ঘুষ গ্রহণ করা হয়েছিল, তাদেরকে নিয়োগ পরীক্ষার ২/১ দিন পূর্বেই প্রশ্নপত্র দেয়া হয়েছিল। এতে মেধাবীরা চাকুরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে ভুক্তভোগিরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
গোসাইরহাট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কম্পিউটার প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন এিনপির নেতা জিয়াউর রহমান জমাাদ্দার। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভোটাররা তাকে ভোট দিয়ে পাশ করালে ও আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী আব্দুল আউয়াল সরদার তৎকালীন গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফি বিন কবিরের সাথে অবৈধ অর্থ লেনদেনে করে তাকে ব্যাপক কারচুপির মাধমে পরাজিত করেছেন। এ বিষয়ে স্বতন্ত্র পরাজিত মেয়র প্রার্থী জিয়াউর রহমান জমাদ্দার নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের কে রছেন। এতে মেয়র আব্দুল আউয়াল সরদার ক্ষিপ্ত হয়ে জিয়াউর রহমান জমাদ্দারকে নানা ভাবে হয়রানি করেছেন। তার ট্রেড লাইসেন্স বাতিলসহ ট্যাক্স ফাকি দেয়ার অভিযোগ তুলে মালামাল ক্রক করার জন্য চিঠি ও দিয়েছিলেন সাবেক মেয়র আব্দুল আউয়াল সরদার। এদিকে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজের অর্থ আত্মসাতের বহু অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা ও হয়েছে। এতে তাকে পৌরসভার ওই পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত ও করা হয়েছিল। এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঢাকার মিরপুর এলাকায় শিক্ষার্থী সিফাত হত্যাকান্ডের ঘটনায় জনৈক লোকমান বাদী হয়ে মিরপুর থানায় ২৫ আগস্ট তারিখে ৮০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় গোসাইরহাট পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আলীম মোল্লা ৩৯ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামী। আব্দুল আলীম মোল্লা প্রশাসনের নাগের ডগায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে। এতে মামলার বাদীসহ সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্নীতিবাজ পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আলীম মোল্লাকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী।
জিয়াউর রহমান জমাদ্দার বলেন,আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী আব্দুল আউয়াল সরদার তৎকালীন গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফি বিন কবিরের সাথে অবৈধ অর্থ লেনদেনে করে তাকে ব্যাপক কারচুপির মাধমে পরাজিত করেছেন। নির্বাচিত হয়ে তিনি নানা ভাবে প্রতিপক্ষদের হয়রানি,দুর্নীতি অনিয়ম,টেন্ডারবাজি ও পৌরসভায় লোক নিয়োগে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে আবদুল আউয়াল বলেন, আমি লোক নিয়োগ দিয়েছি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে। নিয়ম মেনেই নিয়োগ দিয়েছি। আমি কোন টাকা পয়সা নেইনি।
এ ব্যাপারে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল আলীম মোল্যাকে বার বার মুঠো ফোনে ফোন দিলে ও ফোন রিসিভ করছেন না।