জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়নের শিমুলতলার মোল্লাকান্দি এলাকায় হত্যা করে বালুতে পুঁতে রাখা মুনা (১৯) নামে নড়িয়া কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে জাজিরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। খবর পেয়ে কলেজ ছাত্রির বাবা মোকলেছ সেক হাসপাতালে হাজির হয়ে মেয়ের লাশ সনাক্ত করেছেন।
নিহতের চাচাত ভাই মিজান সেক জানায়, জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়নের শিমুলতলার মোল্লাকান্দি এলাকায় হত্যা করে বালুতে পুঁতে রাখা মুনা (১৯) নামে নড়িয়া কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রির মরদেহ বুধবার বিকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।কলেজ ছাত্রি মুনা নড়িয়া বৈশাখী পাড়া মোকলেছ সেক এর কণ্যা। এরপূর্বে মুনার একই উপজেলা পন্ডিতসার এলাকায় রাজিব নামে এক ছেলের সাথে বিয়ে হয়। সেখানে সংসার চলা অবস্থায় বৈশাখী পাড়ার আবু বকর সেক এর ছেলে সজিব (২২) তার পিছু ছাড়েনি।তাকে বিয়ে করতে চায়। এ খবর স্বামী রাজিব জানতে পেরে মুনাকে ডিভোর্স দেয়। বেশ কিছুদিন বাবার
বাড়ি থাকার পর পুনরায় মুনা চাকধ গ্রামের ইতালী প্রবাসি সোহেল নামে এক ছেলেকে পছন্দ করে। তাদেও দুজনের সম্মতিতে গত ১সেপ্টেম্বর বিয়ের দিন ধার্য্য করা হয়। বিয়ের দিন পার্লারে সাজতে গেলে সেই বিয়ের প্রস্তাবকারী সজিব সেখানে গিয়ে মুনাকে বিয়ে করার জন্য পুনরায় প্রস্তাব দিলে মুনা প্রত্যাখান করে। এরপর ইতালী প্রবাসি সোহেল নামের ছেলের সাথেই তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর নববিবাহিতা মুনা তার স্বামী সোহেলকে সাথে নিয়ে নড়িয়া কলেজে যায় । কথা ছিল দেড় থেকে ২ ঘন্টা পরে তাকে যেন স্বামী আনতে যায়। কথা অনুযায়ী স্বামী সোহেল কলেজে আনতে গিয়ে তাকে পায়নি। অনেক খোজা খুজি করে ও তার কোন সন্ধান মিলেনি। গত ২০ সেপ্টেম্বর সোহেল বিদেশ চলে যান। এ ঘটনায় নড়িয়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করা হয়। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়নের শিমুলতলার মোল্লাকান্দি এলাকায় লাশের দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শিয়াল কুকুরের আনাগোনা বেড়ে যায়। এ সময় এলাকাবাসি বালুর মধে পুতে রাখা মানুষের হাত দেখতে পায়। স্থানীয়রা পুলিশ খবর দেয়। সেখান থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এও ঘটনায় পুলিশের উপপরিদর্শক তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে নিহতের বাবা মোকলেছ সেক হাসপাতালে এসে মেয়ের লাশ সনাক্ত করেছেন। এ ঘটনায় সজিবকে আসামী করে একটি হত্য মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে। বাবার দাবী তার মেয়েকে সজিব অপহরন করে নির্যাতন করে। এরপর তাকে হত্যা করে মাটি চাপা দিয়ে লাশ লুকিয়ে রাখে।
এ ব্যাপারে নিহতের বাবা মোকলেছ সেক বলেন, দীর্ঘদিন যাবত সজিব সেক আমার মেয়েকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দেয়। প্রথম বিয়ের পর জামাই জানতে পেরে আমার মেয়েকে ডিভোর্স দেয়। এরপর অনেকদিন পর গত ১ সেপ্টেম্বর মেয়ের পছন্দের ছেলের কাছে দ্বিতীয় বিয়ে দেই। বিয়ের দিন পার্লাওে গিয়ে আমার মে,য়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মেয়ে প্রত্যাখান করে। গত ১১ সেপ্টেম্বও জামাই সোহেলকে সাথে নিয়ে নড়িয়া কলেজে যায়। কথা ছিল দেড় দুই ঘন্টার পর তাকে আনতে যাবে। কথানুযায়ী আনতে গিয়ে তাকে পায়নি। সজিব তাকে অপহরন কওে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। আমি এ হত্যার বিচ্ার চাই।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার বলেন, আমরা লাশ উদ্ধার করে অজ্ঞাত লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠাই। হাসপাতালে এসে বাবা লাশ সনাক্ত করেছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।