নড়িয়ায় সাবেক যুবদল নেতা রনি মাঝি  নিজের হাতে শাস্তি দেন  ,পরে দেয় পুলিশে

নড়িয়ায় সাবেক যুবদল নেতা রনি মাঝি নিজের হাতে শাস্তি দেন ,পরে দেয় পুলিশে

Social Share Now

নড়িয়া উপজেলা সাবেক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে ঘড়িসার মডার্ণ সিটির অফিস জবরদখল করে কমপক্ষে শতাধিক ফলের গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ অগ্নিসংযোগ, কওে পুড়ে দেয়া। এক ইতালী প্রবাসির জমি অবৈধভাবে দখল করে দোকান-পাট নির্মান করা , নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদককে মারধর করে তার ছেলেকে হাত পা ভেঙ্গে দেয়া ও এক ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যুবদল নেতার ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলে প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। শরীয়তপুর জেলা বিএন পির সভাপতির বলছেন কোন সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ , বিএনপিতে দখলদারের জায়গা নেই। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। পুলিশ সুপার বলছেন, ঐ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে এলাকায় অত্যাচার নির্যাতন ,দখলবাজির অভিযোগ রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিব। অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক যুবদল নেতা বলছেন সামাজিক ভাবে সুন্দও ভাবে বসবাস করার জন্য সমাজকে সুন্দর রাখার জন্য সরকারের যে দায়িত্ব থাকে সে দায়িত্¦ পালন করতে পারে অনেক সময় ব্যর্থ হয়। সামাজিকতার দায়বদ্ধতা থেকে আমি আমার এলাকায় আমার আশে পাশে যে সমস্ত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে অসামাজিক কর্মকান্ডে যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে আমি ছোট বেলা থেকে আমি সব সময়ই সোচ্চার। এ ব্যাপারে আমি কখনো অপোষ করিনা। অরন সহ বেশ কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ী আছে। নাজির খা আমাদের জায়গা দখল করেছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে সব সময় আছি। মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছে।
ঘড়িসার মর্ডান সিটির পচিালক নাজির হোসেন খান, নড়িয়া থানা ও স্থানীয সুত্রে জানাগেছে, ২০১০ সালে ঘড়িসার এলাকার অলোক রানী কুন্ডু ও তার ছেলেদের নিকট থেকে নাজির হোসেন খান ও তার ব্যবসায়ী পার্টনাররা বাহের কুশিয়া মৌজায় সাড়ে ৮একর জমি ক্রয় কওে সেখানে মাটি ভরাট করে ১২০ টি প্লট বানিয়ে বিক্রি করছেন। ইতোমধ্যে তারা ৪০/৪৫ডঁ প্লট বিক্রি করেছেন। বাকি প্রায় ৭০ টি প্লট এখনও বিক্রি বাকি রয়েছে। গত ৫ আগষ্টের সরকার পরিবর্তনের পর শরীয়তপুর জেলার নড়িযা উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের বাহির কুশিয়া গ্রামের মৃত হায়দার আলী মাঝির ছেলে নড়িয়া উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্নসাধারন সম্পাদক ”রনি মাঝি ” ঘড়িসার মর্ডান সিটির অফিসটি জবর দখল করে নেয়। ঐ অফিসে থাকা মালামাল কাগজপত্র নিয়ে যায়। ঐ প্রকল্পে যারা প্লট কিনে বাড়ি করেছেন তাদেও থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়মিত চাঁদা আদায় কওে নিচ্ছে। গত ৫ জানুয়ারী মর্ডান সিটির প্রকল্পে সৃজিত ও রক্ষিত আমগাছসহ নানা প্রজাতির প্রায় শতাধিক গাছ রাতের আধারে আগুন দিয়ে জালিয়ে দেয়। ঐ প্রকল্পের দখল করা অফিসে সন্ধ্যার পর মাদক সেবন সহ নানা রকম অসামাজিক কর্মকান্ড করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর একই গ্রামের আনিছুর রহমান হাওলাদাদেরর ছেলে ঘড়িসার বাজারের ব্যবসায়ী অরন আহাম্মেদ হাওলাদারকে ধরে নিয়ে ঘড়িসার মর্ডান সিটির অফিস রুমে নিয়ে রড দিয়ে পিটিয়ে মারাতœক আহত করে। এ সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুকিত শর্ট দিয়ে চাদা দাবী করে। এরপর তার স্ত্রী শান্তা আক্তারের কাছে ফোন করে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে । উপায়ান্ত না পেয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে অরন আহাম্মেদ হাওলাদার কে সজ্ঞাহীন অবস্থায় মুক্ত কওে নেয়।বাকী ৫০ হাজার টাাকর জন্য ২২ নভেম্বর পূনরায় তাকে ধরে নিয়ে মারপিট করে। খবর পেয়ে নড়িয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। অরন আহম্মেদ প্রানে বেচে যায়। বর্তমানে সে জীবনের ভয়ে পালিয় বেড়াচ্ছে। বাড়ীতে তার স্বজনদের আতংকে দিন কাটছে।
এদিকে ঘড়িসার পাগলার মোড় এলাকার ইতালী প্রবাসী আলাউদ্দিন লাকুড়িয়ার ক্রয়কৃত জমিতে রনি মাঝি জবরদখল করে দোকান ঘর নির্মান করেছে। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ইসমত আরা বেগম বাদী হয়ে শরীয়তপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেড আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। রনি মাঝির চাপের মুখে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।
এ ছাড়াও নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও হালইসার এলাকার মতিউর রহমান সাগর ও কে গত ৭ নভেম্বর বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতা কর্নেল (অব) এস এম ফয়সাল এর মোটর বহরে যাওয়ার পথিমধ্যে হামলা করে রনি মাঝি । সে ও তার লোকজন মতিউর রহমান সাগর কে পিটিয়ে মারাতœক আহত করে এবং তার কলেজ পড়–য়া ছেলে মিজানুর রহমান জাহিদ কে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে পা ভেংগে দেয়। এ ঘটনায় তাকে ১নং আসামী করে নড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রনি মাঝি এতই বেপোরোয়া যে সম্প্রতি কালে সে নড়িয়া উপজেলার চন্ডিপুর স্কুলের পিছনে তার চাচাতো ভাই রবিন মাঝি দলবল নিয়ে মাদক সেবন ও মাদক বিক্রির সময় পুলিশের হাতে আটক হয় । খবর পেয়ে রনি মাঝি দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সেখানে গিয়ে পুলিশ কে মারধর করে আসামীদের ছাড়িয়ে নেয়। ঐ ঘটনায় এস আই ফরহাদ হোসেন কে হাত পা ভেংগে দেয়। এস আই ফরহাদ হোসেন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় নড়িয়া থানার এস আই ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। রনি মাঝির এহেন চাদাবাজি, অত্যাচার নির্যাতন ও দখলবাজি এরশাদ শিকদার কে ও হার মানিয়েছে। আসলে তার খুটির জোর কোথায়?
এ ব্যাপারে আলাউদ্দিন লাকুড়িয়ার স্ত্রী ইসমত আরা বেগম বলেন, আমদের ক্রয়কৃত জমিতে জবর দখল করে ”রনি মাঝি” দোকান ঘর করে ভাড়া দিয়ে খাচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদেরকে ভয়ভীতি দখায়। এ ঘটনায় আমি আদালতে মামলা করে চাপের মুখে মামলা প্রত্যাহার করতে বধ্য হয়েছি। পুনরায় আমি জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি আমার জমি ফেরত চাই।
ভুক্তভোগী অরন আহম্মেদ এর মা রিনা আহম্মেদ বলেন, আমার ছেলে অরন আহম্মেদ দীর্ঘদিন যাবত ঘড়িসার বাজরে ব্যবসা করে আসছে। রনি মাঝি দোকানে চাঁদা চায়। চাঁদা না দেয়ায় দোকানের তালা ভেঙ্গে প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করার পর আমার ছেলে অরন আহম্মেদ কে ধরে নিয়ে রডদিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পওে ১লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। টাকার জন্য তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক শর্ট দিয়ে পুড়ে ফেলে। বর্তমানে সে অসুস্থ্য শরীর নিয়ে জীবনের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা মামলা করতে ভয় পাই।
নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর বলেন, গত ৭ নভেম্বর আমি ও আমার ছেলে বিএনপির একটি মিছিলের বহরে যাওয়ার পথিমধ্যে নড়িয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী রনি মাঝি ও তার সহযোগীরা হামলা করে আমাকে ও আমার ছেলেকে গুরুতর আহত করে। তারা আমার ছেলে জাহিদ এর পা ভেঙ্গে দেয়। এ ঘটনায় আমি মামলা করছি। আমি বিচার চাই।
ঘড়িসার ডেভেলপার মডার্ন সিটির পরিচালক নাজির হোসেন খান বলেন, ঘড়িসার এলাকায় আমাদের মর্ডান সিটি প্রকল্পের অফিস রনি মাঝি দখল করে নিয়ে অফিসে থাকা মালামাল ও কাগজপত্র নিয়ে গেছে। এরপর ঐ প্রকল্পে থাকা গাছপালা রাতের আধারে আগুন দিয়ে পুড়ে ধবংস করেছে। আমাদের অফিসর মধ্যে প্রতিদিন রাতের বেলা মাদক সেবন করে নারীদের নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করে যাচ্ছে। আমরা ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছি না। প্রশাসনের কাছে সহায়তা চাই।

এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সফিকুর রহমান কিরণ বলেন, ঘড়িসার এলাকার হায়দার মাঝির ছেলে ”রনি মাঝির” বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ শুনেছি। কোন সন্ত্রাসী, চাদাবাজ, দখলদার দের বিএনপিতে কোন স্থান নেই। সন্ত্রাসী চাদাবাজ দখলদার আমাদের দলের কেউ না। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ ও দখলদারদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করুন।
নড়িয়া উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্নসম্পাদক ”রনি মাঝি” এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সামাজিক ভাবে সুন্দর ভাবে বসবাস করার জন্য সমাজকে সুন্দর রাখার জন্য সরকারের যে দায়িত্ব থাকে সে দায়িত্¦ অনেক সময় পালন করতে পারে অনেক সময় ব্যর্থ হয়। সামাজিকতার দায়বদ্ধতা থেকে আমি আমার এলাকায় আমার আশে পাশে যে সমস্ত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে অসামাজিক কর্মকান্ডে যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে আমি ছোট বেলা থেকে সব সময়ই সোচ্চার। এ ব্যাপারে আমি কখনো আপোষ করিনা। অরন সহ বেশ কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ী আছে।
ছোট বেলা থেকেই আমি অন্যায়ের প্রতিবাদী। কেউ গাজা মদ, ইয়াবা সেবন, বিক্রি ও অন্যায় করলে , আমি তাদেরকে নিজ হাতে ধরে এনে শাস্তি দেই। পরে পুলিশকে দেই। আমি আলাউদ্দিন লাকুড়িয়ার জমি দখল করিনি। আমার জায়গায় আমি দোকান করছি। মডার্ন সিটি নামে যে প্রকল্প করেছে সেখানে আমাদের জমি আছে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে তারা আমাদের জায়গা দখল করে নিয়েছে। এখন সুযোগ হয়েছে আমি আমার জায়গা দখল করে নিছি। অরন ইয়াবা ব্যবসায়ী এজন্য তাকে সহ ১৭ জনকে ধরে এনে বিচার করেছি। প্রত্যেকের কাছে মাদক পাইছি। এ কারনে ওরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে।
শরীয়তপুর পুলিশ সুপার মোঃ নজরুল ইসলাম পিপিএম (সেবা ) বলেন, নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার এলাকার ”রনি মাঝি” দথলবাজ,অত্যাচার ও নির্যাতন চালায়। আমাদের গোয়েন্দা সূত্রে তার অপকর্মের বিষয়ে শুনেছি। সে পুলিশের উপর ও নির্যাতন করেছে। পাশাপাশি অরন আহম্মেদ নামে একজন ব্যক্তিকে মারধরের কথা শুনেছি। এ সব ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply