মোঃ আবুল হোসেন শরীয়তপুর \ দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার প্রায় ৭ কোটি মানুষের প্রাণের দাবী স্বপ্নের পদ্মাসেতু আজ বাস্তবে রুপ নিয়েছে। আগামী ২৫ জুন এ সেতুর উদ্বোধনের জন্য সরকারের পক্ষথেকে তারিখ নির্ধারন করা হয়েছে। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতু উদ্বোধন করবেন। সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে শরীয়তপুর ,মাদারীপুর ও মুন্সিগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারী আমলা থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রী এমপি সহ আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উদ্বোধনী এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। উদ্বোধনী এলাকাসহ পদ্মাসেতু এলাকা নিরপত্তার জন্য সরকারী গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন সার্বক্ষনিক তৎপর রয়েছেন। ঐ দিন জাজিরা প্রান্তে ফলক উন্মোচনের পর মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় জনসভার কথা রয়েছে। সেখানে জনসভার জন্য প্যান্ডেল সহ সকল ধরনের প্রস্ততি চলছে। আমরা জাজিরা সহ পুরো শরীয়তপুরের জনগনকে সেখানে হাজির করার জন্য ইতোমধ্যে বর্ধিত সভা করে পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে করে ব্যাপক জনসমাগম হয়। ২০১৫ সালো ১২ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুর ভিত্তি প্রস্তর করার পর থেকে এ অঞ্চলের মানুষ নানা মুখী উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন। স্বপ্ন দেখছেন শিল্পপতিরা। সেতু চালু হলে প্রভাব পড়বে মৎস্যখামারী, পল্ট্রি খামারী ,ডেইরী খামারী,পরিবহন ব্যবসায়ী ,ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসা সহ নানা রকমের ব্যবসা বানিজ্যে। স্বপ্ন দেখছেন শিক্ষা বিভাগ, কৃষি বিভাগ। সেতু চালু হলে কৃষক তাদের উৎপাদিত পন্য সহজেই রপ্তানি করতে পারবে এবং ন্যায্য মূল্য পাবেন। এ সেতু চালু হলে এ অঞ্চলে বিরাট বিরাট শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে।গড়ে উঠবে বিশ্বমানের হোটেল, রির্সোট। ইতোমধ্যে অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী পোষাক কারখানা সহ নানা মুখী শিল্প কারখানা গড়তে এ অঞ্চলে জমি কেনার জন্য ঘুরছে। অনেকে জমি কিনে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তারা ব্যবসা বানিজ্য করে উন্নতির আশার আলো দেখছেন। সেতু চালু হলে পোষাক শিল্পে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। দেশী ও বিদেশী উদ্যোক্তারা এসব এলাকায় বিনিয়োগ করবেন । আমি নিজেও পদ্মাপাড়ে পোষাক শিল্প কারখানা গড়ে তোলার জন্য পরিকলপনা নিয়েছি। যাতে করে এ এলাকার মানুষ কাজ করে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারে।তাতে করে সর্বক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে। ফলে মানুষের জীবন যাত্রার মান বাড়বে। শিল্পকারখানা গড়ে উঠলে বেকারত্ব মানুষের কর্মসংস্থানে সৃষ্টি হবে,বেকারত্ব দুর হবে। কর্ম করে মানুষ স্বাবলম্বী হবে। পরিবারে ফিরে পারে সুখ ও শান্তি। সেতু চালু হলে এ এলাকার উন্নত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়বে। আমাদের প্রতিবেদকের নিকট একান্ত সাক্ষাত কারে এ সব আশার কথা বলছেন শরীয়তপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহসভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি জাজিরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পোষাক শিল্প কারখানার মালিক মোঃ মোবারক আলী সিকদার। তিনি বলেন মানুষ বাড়ির ভাত খেয়ে কারীগরি শিক্ষা সহ উন্নত শিক্ষা লাভ করতে পারবে। একজন মূমর্ষ রোগী নিয়ে আর ভাবতে হবেনা। তারা তাদের কাঙ্খিত সেবা পাবেন। একজন রিক্সা পুলার থেকে শুরু করে শ্রমজীবি মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। তারা দু’বেলা দুমঠো ভাত খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে ঘুমোতে পারবেন। এতে করে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ভাবে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হবে । তিনি আরো বলেন,বিশেষ করে পদ্মাসেতুর দুপাড়ে বিশাল দুটো সুপার মার্কেট গড়ে উঠবে। এখানে আন্তর্জাতিক মানের এয়ারপোর্ট ও রেলওয়ে স্টেশন হবে। সেখানে ও বহুলোকের কর্ম সংস্থানের সৃষ্টি হবে। পদ্মাসেতু জাতীয় অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।ফলে শরীয়তপুরেও দেশী বিদেশী বিনিয়োগ হবে। শরীয়তপুর থেকেই জাতীয় অর্থনীতিতে একটা বিরাট অংকের রাজস্ব আসবে। রাজধানী সহ সারাদেশে যোগাযোগের খরচও কমে আসবে। কম সময়েই পণ্য পরিবহন করা যাবে। ফেরীর জন্য আর তাদের অপেক্ষা করতে হবেনা। সহজেই তারা রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়তের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তাই আগামী ২৫ জুন পার করতে এ অঞ্চলের মানুষ প্রহর গুনছেন। তারা আনন্দের সময় পার করছেন। পদ্মাসেতু উদ্বোধন যেন ঈদের উৎসব তাদের জন্য। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য জন্যবাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাজিরা তথা শরীয়তপুরবাসির পক্ষথেকে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।