পদ্মা নদীতে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে পদ্মাসেতু, বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন

Social Share Now


সরকারী নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করেই শরীয়তপুরের জাজিরার পদ্মাসেতু সংলগ্ন এলাকায় পদ্মা নদীতে শত শত অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালীদের সমন্বয়ে গড়ে উঠা একটি চক্র। পদ্মা সেতুর কাছ থেকে অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এক দিকে মারাতœক ঝুকিতে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মাসেতু । অন্য দিকে বিলীন হওয়ার আশংকায় রয়েছে কয়েক টি গ্রাম শত শত একর ফসলি জমি , স্কুল ,মসজিদ ,মাদ্রাসাসহ প্রায় হাজারো পরিবার। এদিকে অবৈধ ড্রেজার বন্ধ ও নদী শাসনের দাবীতে মানব বন্ধন করেছে এলকাবাসী। তবে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন , পদ্মা সেতুর পিলারের সু রক্ষায় কিছিু ড্রেজারের অনুমতি থাকলেও অনেক অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। আমরা কয়েক দিনে আগে ২১ জন কে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেছি। জাজিরা সিমান্তে অবৈধ ড্রেজার চললে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
পাইন পাড়া এলাকার আব্দুল লতিফ বেপারী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মাসেতুর পি আর ৩৩ থেকে পি আর ২২,২৩ পর্যন্ত বিস্তীর্ন এলাকা জুড়ে চলছে শত শত অবৈধ ড্রেজার। এ যেন বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালাচ্ছে একটি প্রভাবশালী চক্র। যেখানে শত শত ড্রেজার (খনন যন্ত্র) দিয়ে কাটা হচ্ছে দিন রাত করে অপরিকল্পিত ভাবে কোটি কোটি ঘন ফুট বালু । যার ফলে মারাতœক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতু । অপর দিকে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের পাইন পাড়া, আহাম্মদ মাঝির কান্দি ,আলিম উদ্দিন বেপারী কান্দি ,আলম খার কান্দি গ্রামের ৩ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭/৮ টি মসজিদ ২ টি মাদ্রাসা ১ টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও একটি গুচ্ছ গ্রাম সহ প্রায় ১ হাজার পরিবার মারাতœক ভাংগনের ঝুকিতে রয়েছে। অবৈধ ভাবে পদ্মা সেতুকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে বালু কেটে নিচ্ছে মুন্সিগঞ্জ জেলার সেলিম দেওয়ান,মতি মাদবর ,ও জহের ফকির সহ একাধিক ড্রেজার ব্যবসায়ীরা। শরীয়তপুরের জাজিরা এলকার ড্রেজার ব্যবসায়ী তুহিন ফরাজী ,চুন্নু মাদবর ,বাচ্চু মাদবর ওরফে কালা বাচ্চু, দবির মোল্লা,সুলতান মোল্লাসহ ১০ /১৫ জন ড্রেজার বাবসায়ী চক্র। প্রতিদিন প্রতিটি ড্রেজার দিয়ে কাটা হচ্ছে ১লাখ থেকে ২ লাখ ঘন ফুট বালু। শাতাধিক ড্রেজার দিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে কোটি কোটি ঘন ফুট বালু। এ সকল বালু বিক্রি করা হচ্ছে ঢাকা, নারায়ন গঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়। এদিকে সম্প্রতি জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ২১ জন ডেজার শ্রমিক কে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেছেন। তার পরেও থামানো যাচ্ছে না এ সকল অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ীদের। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ ও নদী শাসনের দাবীতে মানববন্ধন করেছে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার পাইনপাড়া গ্রামের মাঝিরহাট এলাকার নদীর পাড়ে মানব বন্ধন করেছে এলাকাবাসী । উক্ত মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আব্দর রাজ্জাক মাঝি,আব্দুল লতিফ বেপারী ,মালেক মোস্তাক,আব্দুল হাকিম মজুমদার,মোঃ আলী মৃধা,আবুল কালাম মাঝি,মতিউর রহমান টেপা, আনোয়ার হোসেন মাঝি,ফজলুল হকসহ আরো অনেকে। মালেক মোস্তাক বলেন, আমরা আমাদের বাপ দাদার ভিটে মাটি পদ্মা সেতুর জন্য দিয়েছি । আজকে পদ্মাসেতু হয়েছে আমরা অনেক খুশি আমরা আনন্দিত । এখন অপরিকল্পিত ভাবে আমাদের পদ্মা সেতুর নিচ থেকে বালু কেটে নিচ্ছে । তাতে আমরা মারাতœক ঝুঁকির মধ্যে আছি আমাদের এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আমাদের রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য মানব বন্ধন করেছি।
জাজিরা এলাকার ড্রেজার ব্যবসায়ী বাচ্চু মাদবর বলেন , আমরা অনুমতি নিয়ে বালু কাটি । অবৈধ ভাবে বালু কাটি না।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল আহসান সোহেল বলেন , পদ্মা সেতুর পিলারের সু রক্ষায় কিছু ড্রেজারের অনুমতি থাকলেও অনেক অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। আমরা গত কয়েক দিনে ২১ জন কে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেছি। জাজিরা সিমান্তে অবৈধ ড্রেজার চললে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

Leave a Reply