শরীয়তপুর প্রতিনিধি \ গত জুলাই ও আগষ্ট মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ঢাকার রাজপথে নিহত হয়েছে শরীয়তপুর জেলার ১৭ জন । এরমধ্যে তিনজনের পরিবার মামলা দায়ের করেছে। এ সকল মামলা আসামীরা বেশীর ভাগই শরীয়তপুর জেলার। এ সকল খুনের মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে শরীয়তপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেনা। পুলিশ বলছে আমাদেও কাছে আদালতের বা যে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে ঐ সকল থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কতৃক রিকোজিশন লাগবে।
মামলার বিবরনে জানাগেছে, গত জুলাই ও আগষ্ট মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ঢাকার রাজপথে শরীয়তপুর জেলার ১৭ জন ছাত্র জনতা নিহত হয়েছে । এরা হলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার চরচিকন্দির মোঃ মামুন মিয়া । জাজিরা উপজেলার সাং চর খাগুটিয়ার মোঃ দুলাল । শরীয়তপুর সদর উপজেলার আবুড়া,চিকন্দির মোঃ রিয়াজুল তালুকদার। নড়িয়া উপজেলার রাজনগর এর মোঃ জোনায়েদ হোসেন। সখিপুর থানার ডিএমখালী মাদবর কান্দির, আকাশ আহম্মেদ । ডামুড্যা কুলকুড়ির নুরে আলম । সখিপুর থানার আনু সরকার কান্দির শাহজালাল রাঢি । ডামুড্যা উপজেলার চরমালগাও আল আমিন । নড়িয়া উপজেলার সালধ গ্রামের বাধন ঢালি । নড়িয়া উপজেলার সুরেশ^রের মিরাজুল ইসলাম । নড়িয়া উপজেলার পঞ্চপল্লী গ্রামের আল আমিন মির । ডামুড্যা উপজেলার ফোরকান পাড় এর মোফাজ্জেল হোসেন । শরীয়তপুর সদর উপজেলার কোটাপাড়া এলাকার মনোয়ার হোসেন, এবং সোহেল রানা সহ ১৭ জন। এরা যাত্রাড়ি, মোহাম্মদপুর, সাভার , আজিমপুর ,রামপুরা, মিরপুর ,উত্তরা ,মানিকনগর এলাকায় গুলীবিদ্ধ হয়ে খুন হয়েছে।
এরমধ্যে তিনজনের পরিবার মামলা দায়ের করেছে। এরা হলেন আল আমিন মীর এর পরিবার এর পক্ষে ইসমাইল ,,রিয়াজল তালুকদারের পরিবার এর পক্ষে রুবেল শেখ ও সোহেল রানার পরিবার এর পক্ষে মোঃ জুয়েল । এর মধ্যে ২টি মামলা যাত্রাবাড়ি থানায় রেকর্ড হয়েছে। অপর মামলাটি সাভার থানায় রেকর্ড হয়েছে। তিনটি মামলায় প্রায় ৫ শতাধিক আসামী রয়েছে। এরমধ্যে স্থানীয় পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওবায়দুল কাদের ,আসাদুজ্জামান কামাল, আনিসুল হক, শেখ ফজলে নুর তাপস, হাসান মাহমুদ,হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, সালমান এফ রহমান, ডিবি হরুন বিপ্লব কুমার সরকার সানজিদা খানম, সাদ্দাম হোসেন শেক ওয়ালী আসিফ ইনানসহ শরীয়তপুরের সাবেক ৪জন এমপি , শরীয়তপুর জেলা আওয়মীলীগের সভাপতি ,সাধারন সম্পাদক উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ,সাধারন সম্পাদক,যুবলীগ সভাপতি ,সাধারন সম্পাদক ,জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক ও যুগ্ন আহবায়ক ,জেলা স্বেচ্ছাসেবকলেিগর সভাপতি সাধারন সম্পাদক, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ,সাধারন সম্পাদক সহ পৌর মেয়র,উপজেলা চেয়ারম্যান ,ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের চেয়ারম্যানগন ,জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসীরা আসামী রয়েছেন।
এদের মধ্যে শরীয়তপুরে বাড়ি যাদের তারা অনেকেই বাড়িতে ঘুমাচ্ছে। এলাকায় ব্যবসা বানিজ্য করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হরদম তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পুলিশ সুপার অফিস ,বিভিন্ন থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগনের কার্যালয় চলাফেরা ,কাজকর্ম করছে। এমনকি উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় ও তারা যোগদান করছে। তারা পরিষদের কাজকর্ম চালাচ্ছে।
এ সব জেনে শুনে ও না জানার ভ্যান করছে প্রশাসন । ফলে শরীয়তপুর জেলা ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়নি। এরা সকলেই পতিত সরকারের দোসর। তাছাড়া এ জেলায় আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের নিয়োগকৃত সকল প্রশাসনই বিদ্যমান রয়েছে। তারা ৫% ও বদলী হয়নি। তাদের
দ্বারাই চলছে প্রশাসনের কাজকর্ম । মাত্র ১০/১১ জন লোক নুতন আসছেন । তাদের মধ্যে ও কারো কারো নামে বদনাম আছে ৫ আগষ্টের পরে স্টেশন ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। এরপর বদলীর খবর পেয়ে নুতন স্টেশনে যোগদান করেছেন।এ কারনে পূর্বের প্রেম ভালবাসা বিনষ্ট করতে চাচ্ছেনা তারা। এদের দ্বারাতো আর এ সরকার ভাল কিছু আশা করতে পারেন না। ঈদানিং কালে শোনা যাচ্ছে ২ মাস অপেক্ষা করুন আবার আওয়ামীলীগ ফিরে আসবে।এ সব কথা বলে বেড়াচ্ছে আওয়ামীলীগের সমর্থকরা।এ সাহস তারা কিভাবে পায়। কে তাদের এ ধরনের সাহস দিয়েছে বা এর পিছনে কাদেরই বা ঈন্দন রয়েছে খতিয়ে দেখা দরকার। অথচ পতিত সরকারের আমলে বিরোধী দলীয় লোকজন মামলা ছাড়াই ভয়ে ঘরে রাতে ঘুমাতে পারতো না।আর মামলা কাধে নিয়ে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা সহ জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য ঘুরছে।তাদের সাভাবিক কাজ কর্ম করে চলছেন।এদের গ্রেফতারের ব্যাপারে কেন আইনের প্রশ্ন আসে ? ।
এ ব্যাপারে বাদী রুবেল তালুকদার বলেন, মামলা করেছি অনেক আগেই। আওয়ামীলীগের শীর্ষ কয়েকজন নেতা ছাড়া শরীয়তপুরের কাউকেইতো পুলিশ গ্রেফতার করছে না। আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।উল্টো আমাদেরকে আসামীরা বলছে ২ মাস অপেক্ষা কর । আবার ফিরে আসবো। তখন যাবি কোথায় ? । আমরা ভীত সন্ত্রন্ত ।
বাদী মোঃ জুলে বলেন, মন্ত্রী পর্যয়ের কখেজনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানে হলে ও স্থানীয় জেলা পর্যায়ের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও এ মামলার আসামীদেরকে সাভাবিক কাজকর্ম করতে দেখছি। পুলিশতো তাদেরকে কিছুই বলছেনা। অনেকে বিভিন্ন অফিস আদালতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আইন শৃংখলা মিটিং করে। আবার কেউ কেউ কর্মকর্তাদেও বিদায় অনুষ্ঠানে বক্ত্য দেয়। দেখারতো কেউ নেঈ । এ জন্যই বলছে যার চলে যায় সেই বুঝে হায় বিচ্ছেদে কি যন্ত্রনা।
এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এবং সখিপুর থানার ওসি ওবায়দুল এর সাথে আলোচনা কালে তারা বলেন ,মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা আমাদেরকে রিকোজিশন পাঠালে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারি। এ ছাড়া কি দিয়ে তাদেরকে আমরা গ্রেফতার করবো।