ভেদরগঞ্জে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নিয়ে এস এস সি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষনের অভিযোগ

Social Share Now


শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের এক স্কুলছাত্রী জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা ধর্ষকের অপর দুই বন্ধু ভিডিও করে তিন মাস পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল করে দেয় । এতে লোকলজ্জায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে ওই কিশোরীর। ধর্ষকেরা ধর্ষিতাকে হুমকি দেয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ারপর ধর্ষিতা থানায় মামলা করে ।
ভেদরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্ষক রাজীব কুমার ও সাজনপুর ইসলামীয় উচ্চবিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার সাজনপুর ইসলামীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এস এস সি পরীক্ষার্থী গত ১৫ মার্চ যায়। স্কুল থেকে বাড়ী ফেরার পথে তাকে তার সহপাঠী অর্পন দাস, দুর্জয় দাস, মুবদি সরদার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে সাজনপুর বাজার থেকে ওই স্কুলছাত্রীকে অর্পণ দাসের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর ছাত্রিকে একটি কক্ষে নিয়ে দুর্জয় ও মুবদির সহযোগিতায় জোরপূর্বক ধর্ষণ করে অর্পণ দাস। তাদের ওইসব কর্মকান্ড আবার মুঠোফোনে ধারন করে অর্পনের দুই বন্ধু দুর্জয় ও মুবি তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সেইদিনের ধারনকৃত ভিডিও ক্লিপটি গত ১৫ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয় তারা। এ ঘটনার পর থেকে স্কুল ছাত্রির স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি এলাকায় জানা জানি হলে ছাত্রি বাদী হয়ে ভেদরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। আসামীরা হলেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের সাজনপুর দাসপাড়া গ্রামের অশিম দাসের ছেলে অর্পণ দাস (১৯)একই এলাকার কোমল দাসের ছেলে দুর্জয় দাস(১৯), দক্ষিণ মহিষার গ্রামের মোক্তার সরদারের ছেলে মুবদিদ সরদার। ঘটনার পর থেকেই ভিডিও দেখিয়ে ওই আবারও কুপ্রস্তাব দেয় দুর্জয় ও মুবদি। ওই কিশোরী সরদার(১৮)। তারা সকলেই সাজনপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ১ ও ৩নং আসামীরা ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। এ ঘটনায় এখনো আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি ভেদরগঞ্জ থানা পুলিশ। আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় উল্টো মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ধর্ষিতার পরিবারের।
ছাত্রির বাড়িতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মামলার আসামীরা তার সাথে একই স্কুলে পড়ালেখা করে।সহপাঠি হওয়ায় জন্মদিনের অনুষ্ঠান যেতে রাজি হই।কিন্তু ওরা আমাকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ভিডিও ধারন করেছে। পরবর্তীতে আমাকে ওই ভিডিও দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেয় । আমি রাজি না হওয়ায় ওরা ওই ধারনকৃত ক্লিপটি ভাইরাল করে দিয়েছে। ওরা আমার জীবনটাকে নষ্ট করে দিছে। ওদের আমি বিচার চাই। আসামীরা অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন চাপের মধ্যে আছি। সামনে আমার এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবো কি না জানিনা।
আসামী মুবদি সরদার বলেন , আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত না । ওরা করেছে শুনে আমি ওদের বকাবকি করেছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।
সাজনপুর ইসলামীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে নাম প্রকাশে একাধিক সহকারী শিক্ষক বলেন , আমাদের স্কুলে যে ঘটনাটি ঘটেছে এটা খুবই দুঃখ জনক । বিষয়টির কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন যাতে কখন ও এ ধরনের ঘটনা না ঘটে ।
ছাত্রির মামা সুমন বলেন , আমরা ভেদরগঞ্জ থানায় মামলা করেছি । এখন ও কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি । আমার ভাগনির জীবন নিয়ে আমরা শংকিত ।
মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা ভেদরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিব সূত্রধর বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আমাদের ওসি স্যারের কাছে ভিডিও টি রয়েছে।
ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) বাহালুল খান বাহার বলেন , ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার আমার কাছে আসছিল। আমি সাথে সাথে মামলা নিয়েছি । আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply