বাসি খাবার খেয়ে তিন ভাইবোনের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে পরিবেশ। পরিবারের দাবি কীটনাশক প্যাকেটে রাখা বাসি বিরিয়ানি তিন শিশুকে খাইয়েছিলেন প্রতিবেশী। তারা এর বিচার দাবি করেছেন। শুক্রবার সকালে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের মুলাই বেপারিকান্দি গ্রামের শওকত দেওয়ানের বাড়িতে গিয়ো জানা যায়। মৃত তিন শিশুর মা আইরিশ বেগম অভিযোগ করে বলেন প্রতিবেশী রওশন আরা বেগম তাদের বাড়ির ছেলে-মেয়েকে ফ্রিজে রাখা বাসি বিরানি না খাইয়ে আমার সন্তানদের খাইয়েছে। বিরানি খেয়ে আমার ছেলে-মেয়েরা মারা গেলো। শত্রæতা করে তাদের মারা হয়েছে।মৃত শিশুর ফুফু রুপালী বেগম ও খুকু মনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন কীটনাশক প্যাকেটে বিরানি রেখে খাওয়ানো হয়েছিল তাদের তিন ভাতিজা-ভাতিজিকে। ওই প্যাকেটে খাবার খাওনোর কথা আমাদের বলেনি রওশন আরা। রওশন আরা শত্রæতা করে আমাদের বুক খালি করেছে। আমরা মামলা করবো। আমরা এ হত্যা বিচার চাই। এদিকে ঘটনার পর থেকে প্রতিবেশী রওশন আরা বেগম বাড়ি থেকে পলাতক রয়েছেন। তার বোন রোকসানা আক্তার বলেন আমার বোন ঘরে বসে বিরানি খাচ্ছিল। তখন খাদিজা ও সৌরভ এলে তাদের কেও দেয়। খাওয়া শেষে তারা আবার বিরানি বাড়িতে নিয়ে যায়। বিরানি খেয়ে আমার বোন ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এখন শুনি খাদিজা, সৌরভ ও সাথী মারা গেছে। এতে আমার বোনের দোষ কোথায়?
এলাকাবাসী জানান, শওকত দেওয়ানের তিন মেয়ে ও দুই ছেলে মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিবেশী রওশন আরা বেগমের ফ্রিজে থাকা বাসি বিরিয়ানি খায় । এরপর থেকে তাদের পেটে ব্যথা ও বমি হতে থাকে। অসুস্থ্যতা বাড়তে থাকলে তিনজনকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শিশু সৌরভ, খাদিজা ও তাদের বোন সাথী আক্তারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় খাদিজা ও সৌরভ । বৃহস্পতিবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সাথী আক্তার ও বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ওই খাবার খেয়ে ফুট পয়জিং হয়েছে, নাকি তাদের বিষ খাওয়ানো হয়েছে ময়না তদন্তে রিপোর্ট পেলে জানা যাবে। তবে বিষয়টি তদন্ত করে আসল ঘটনা বের করার দাবি জানাচ্ছি। জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তিন শিশুর মরদেহের ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে কী হয়েছিল। পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।