শরীয়তপুরে ফোরলেন কাজের অগ্রগতি নেই, শরীয়তপুরবাসী হতাশ ।

Social Share Now

দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মাসেতু আগামী জুনের শেষের দিকে উদ্ভোধন হওয়ার কথা রয়েছে। এতে শরীয়তপুরসহ দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ উচ্ছ¡াসিত ও আনন্দিত। কিন্তু পদ্মাসেতুর সংগে সংযোগসড়ক না থাকার কারনে তেমন কোন সুফল পাবে না শরীয়তপুর জেলার মানুষ। এ ফোরলেন প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজের মধ্যে একটির টেন্ডার হলে ও অপর দুটির টেন্ডার এখন ও হয়নি। ফোরলেন কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় পদ্মাসেতুর সুফল থেকে বঞ্চিত হবে শরীয়তপুর জেলাবাসী। এতে করে জেলা বাসী চরম হতাশ ও ক্ষুদ্ধ। তবে শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে জমি অধিগ্রহনের সমস্যার জন্য অনেক জায়গায় কাজ করা যাচ্ছে না। যেখানে সরকারী খাস জমি আছে সেখানে কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পদ্মাসেতুর সংযোগ সড়ক থেকে শরীয়তপুর জেলা শহর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার ফোরলেনের কাজ কে তিনটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে । তারমধ্যে একটি প্যাকেজের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। একটির দরপত্র প্রক্রিয়াধীন আর অপরটির এখন ও দরপত্র আহবান করা হয়নি।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও শরীয়তপুর জেলা বাস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার এবং স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুনের শেষে উদ্ভোধন হতে যাচ্ছে দক্ষিন পশ্চিাঞ্চলের ২১ জেলার ৭ কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মাসেতু। এ স্বপ্নের পদ্মাসেতুর সংগে সংযোগ সড়ক নেই। পদ্মাসেতুর দক্ষিন প্রান্তে জাজিরার নাওডোবা থেকে শরীয়তপুরের জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের সড়কটি খুবই অপ্রশস্ত বা সরু ও খানাখন্দকে ভরা। এখানে একটি গাড়ী অপর একটি গাড়ীকে সাইড দিতে হলে রাস্তার এক পাশের্^ দাড়িয়ে থাকতে হয়। সেতু চালু হলে এ অপ্রশস্ত রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মোটেই সম্ভব হবে না বলে মনে করেন অভিজ্ঞ মহল। গত কয়েক বছর পূর্বে পদ্মাসেতুর সংযোগ সড়ক জাজিরার নাওডোবা থেকে শরীয়তপুর জেলা শহর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার ফোরলেন সড়ক নির্মানের প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। অনুমোদন অনুযায়ী ১ হাজার ৬ শত ৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে আগামী ২০২৪ সালের ২৩ জুন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসন রাস্তার দুই পার্শে^র জমি অধিগ্রহনের কাজ শুরু করে। পাশাপাশি শরীয়তপুর জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ উক্ত ফোর লেনের কাজকে তিনটি প্যাকেজে ভাগ করে। তার মধ্যে শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস অফিস থেকে জাজিরা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটারের নির্মানের ১৪২ কোটি টাকা ব্যায়ে দরপত্র আহবান করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। দরপত্র আহবান করার পর এ প্রকল্পে শুধু ৬০ ভাগ জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে। এখন ও ফোরলেনের কাজে হাত দিতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বাকী দুটি প্যাকেজের এখন ও দরপত্র আহবান করতে পারেনি শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ। একটি কাজ চলমান হলেও তেমন কোন দৃম্যমান না হওয়ায় পদ্মাসেতুর তেমন কোন সুফল পাচ্ছে না শরীয়তপুরবাসী। এতে করে পুরো জেলাবাসী হতাশ ও ক্ষুদ্ধ।
শরীয়তপুর জেলা বাস মালিক গ্রæপ লাইনের সাধারন সম্পাদক নাছির উদ্দিন বেপারী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে অপশ্রস্ত রাস্তা দিয়ে কোন রকম যাত্রীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। পদ্মাসেতুর সাথে অন্যন্য জেলার সংযোগ সড়কের কাজ শেষে হলেও আমাদের শরীয়তপুরের এখনো সংযোগ সড়ক ও ফোর লেনের কাজ হয়নি। যার ফলে পদ্মাসেতু উদ্ভোধন হলেও আমরা যাত্রীদের ভাল সেবা দিতে পারবো না। যাত্রিরা এ সেতুর সুফল পাবে না।
জাজিরার নাওডোবা এলাকার রমিজ উদ্দিন ,আব্দুর রব ঢালী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মানের জন্য বাপ দাদার ভিটে মাটি ছেড়ে দিয়েছি। পদ্মাসেতু হয়েছে তাতে আমরা আনন্দিত। কিন্তু পদ্মাসেতু থেকে শরীয়তপুরের সংগে সংযোগ সড়ক না থাকায় আমরা পদ্মাসেতুর সুফল পাচ্ছি না।
জাজিরার বি কে নগর এলাকার ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর মুন্সি,খলিল পেদা, জাফর সরদার বলেন, শুনেছি আমাদের এ রাস্তা ফোরলেন করা হবে। ২/১ জায়গায় অধিগ্রহনের কথা শুনলে ও বাস্তবে কোন অগ্রগতি দেখছি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শরীয়তপুরের একাধিক তহশিলদার বলেন , আমারা অধিগ্রহনের রাস্তার দু’পাশের জমির মালিকদের নামের তালিকা করে জমা দিয়েছি। জমি অদিগ্রহনের কাজ চলমান রয়েছে।
শরীয়তপুর সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন,ফোরলেনের কাজের জন্য জমি অধিগ্রহনের কাজ প্রায় শেষের দিকে । এর বেশী কিছু আমি বলতে পারবো না।
শরীয়তপুর জেলা বাসও মিনিবাস মালিক গ্রæপের সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ তালুকদার বলেন , খুব শীঘ্রই পদ্মাসেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। পদ্মাসেতুর সংগে নেই আমাদের সংযোগ সড়ক। ফোরলেনের কাজ ও হয়নি। আমরা চাই দ্রæত ফোরলেনের কাজ হউক। নয়তো আমরা এর কোন সুফল পাবো না।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহেল বলেন ,জাজিরার নাওডোবা থেকে শরীয়তপুর পর্যন্ত ফোরলেনের জন্য জমি অধগ্রহনের ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ক্ষতিপুরনের চেক প্রদান করা হচ্ছে।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ভুইয়া রেদওয়ানুর রহমান বলেন, জাজিরার নাওডোবা থেকে শরীয়তপুর জেলা শহর পর্যন্ত ফোরলেন কাজের তিনটি প্যাকেজের মধ্যে একটির টেন্ডার হয়েছে বাকী দুটি প্রক্রিয়াধীন। জমি অধিগ্রহনের বিলম্ব হওয়ার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ করতে পারছেন না। যেখানে সরকারী খাস জমি আছে সে খানে কাজ চলমান রয়েছে।

Leave a Reply