শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কের কাজ শুরুর আগেই প্রকল্প বাতিল হওয়ার আশংকা, জনমনে ক্ষোভ ্\

শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কের কাজ শুরুর আগেই প্রকল্প বাতিল হওয়ার আশংকা, জনমনে ক্ষোভ ্\

Social Share Now
মো: আবুল হোসেন সরদার, শরীযতপুর প্রতিনিধি \ শরীয়তপুর-চাদঁপুর মহাসড়কের ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পরে আছে। সড়ক সম্প্রসারন ও মজবুত করনের জন্য ২০১৯ সালে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়। গত ৬ বছরে ও জমি অধিগ্রহনের কাজ শেষ না হওয়ায় ২৯ কিলোমিটার অংশের কাজই শুরু করতে পারেনি সড়ক বিভাগ। বাকী ৬ কিলোমিটারের কাজ চলেচে ঢিলেডালা ভাবে। এমন অবস্থায় ব্যয় বৃদ্ধি সহ নানা কারনে প্রকল্প বাতিলের শংকা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে শরীয়তপুরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রকল্পটি সম্পন্ন করতে আরো ও ৩৫০ কোটি টাকার মত অতিরিক্ত প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারনে পূরনো প্রকল্পের ডিপিপি সংশোধন করে বরাদ্দ বাড়ানো সম্ভবনা কম। তাই প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়া আশংকা রয়েছে।
শরীয়তপুর ও চাদঁপুরকে ভাগ করেছে মেঘনা নদী। পূর্ব পাড়ে চাদঁপর, পশ্চিম পাড়ে শরীয়তপুর জেলার অবস্থান। এ জেলার উপর দিয়ে চট্রগ্রাম অঞ্চলের যানবাহন দক্ষিন ও দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলায় যাতায়ত করে। দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের তিনটি স্থল বন্দর ও দুটি সমুদ্র বন্দরের পণ্য সামগ্রী শরীয়তপুর -চাদঁপুর মহাসড়ক দিয়ে পরিবহন করা হয়ে থাকে।
শরীয়তপুর সড়ক ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাদঁপুরের ইব্রাহিমপুৃর ফেরীঘাট থেকে শরীয়তপুর সদরের মনোহরবাজার পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য ৩৫ কিলোমিটার। ২০১৯ সালে সড়কটি সম্প্রসারন ও মজবুত করন সার্ফেসিং ও ব্রীজ কালভার্ট নির্মানের একটি প্রকল্প অনেুমোদন করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রনালয়। প্রথমে ৮৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে ৩৪ ফুট প্রস্ত ২ লেনের সড়ক নির্মাণ ও ৪ লেনের জন্য জমি অধিগ্রহনের প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। ২০২০ সালে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের অধিগ্রহন শাখা ২৪০ একর জমি অধিগ্রহনের কার্যক্রম শুরু করে। পাশাপাশি ৩৫ কিলোমিটার সড়ক একটি সেতু ও ৫০টি কালভার্ট নির্মাণে ৪টি গ্রচ্ছ প্রকল্পের (প্যাকেজ) দরপত্র আহবান করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। প্রথম প্যাকেজের ৬কিলোমিটার (ইব্রাহিমপুর ফেরীঘাট থেকে বালার বাজার পর্যন্ত) সড়কের দরপত্র আহবান করা হয় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর। এখনো সে কাজ ডিলেডাল ভাবে চলমান রয়েছে।
সড়ক সূত্রে আরো জানাযায়, সড়কটির বাকি ২৯ কিলোমিটারের তিনটি প্যাকেজে দরপত্র অহবান করা হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারী থেকে জুনের মধ্যে কার্যাদেশ দেয় সড়ক বিভাগ। কাজ শেষ করার সময় সীমা ছিল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে। অন্য তিনটি প্যাকেজের কাজের সময় সীমা ছিল ২০২২ সালের আগষ্ট থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত। কিন্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জমি বুঝে না পাওয়ায় কাজই শুরু করতে পারনি। পরে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে চুক্তি বাতিল করে সড়ক বিভাগ । গেল বছরের ফেব্রæয়ারীতে নুতন করে দরপত্র আহবান করা হয়। সে দরপত্র মূল্যায়নের জন্য মন্ত্রনালয়ে পাঠায় সড়ক বিভাগ। মন্ত্রনালয় থেকে নুতন করে দরপত্র আহবানের নির্দশ দেয়া হয়েছে।
২০২০ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ২৪০ একর জমি অধিগ্রহন করার কথা জেলা প্রশাসনের। এ জন্য জেলা প্রশাসনকে ৪৩১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে মন্ত্রনালয়। কিন্ত গত ৬ বছরে মাত্র ৭২ একর
জমি অধিগ্রহন করে সড়ক বিভাগ কে বুঝিয়ে দিয়েছে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসন। এখন পুরো অধিগ্রহন প্রক্রিয়া শেষ করতে জেলা প্রশাসনের আরো ৩০০ কোটি টাকা প্রয়োজন, যা এ মূহুর্তে বরাদ্দ নেই।
ট্রাকের লোহার যন্ত্রাংশ নিয়ে খুলনা থেকে চট্রগ্রাম যাচ্ছিলেন হাসেম আলী তিনি বলেন, নিয়মিত এ সড়ক দিয়ে যাতায়ত করি। ২০ বছর যাবত এ সড়কের বেহাল অবস্থা। ২০১৫ সালের পর সড়কটি একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে সং¯কার করে আবার চালু করা হয়। এখনো সড়কটির বিভিন্ন স্থানে গর্ত ও খানা খন্দে ভরা। জীবনের ঝুকি নিয়েই আমাদেও চলতে হচ্ছে।
চট্রগ্রাম থেকে বেনাপোল দিদার পরিবহনের যাত্রী বাহী বাসের ড্রাইভার জাকির মিয়া, বলেন, এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করি। ঢাকা দিয়ে ঘুরে না গিয়ে চাদপুর ফেরি দিয়ে যেতে আমাদেও অনেক সহজ হয়। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল দশা। মাঝে মধ্যে কাজ চলে। এখন শুনছি তাও নাকি বন্ধ হয়ে যাবে। তা হলে আমাদেরকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেশী ঘুরে যেতে হবে।
শরীয়তপুর গনপুর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী তিমির কুমার মন্ডল বলেন, এ প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ ছিল বিগত ৫ বছর আগের বাজারদর অনুযায়ী। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী জমি অধিগ্রহনের ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। পুন দরপত্র আহবান করতে গেলে নুতন বাজারদও অনুযায়ী দরপত্র আহবান করলে প্রকল্পের ব্য অনেক বেড়ে যাবে। সে অনুযায়ী এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ নেই। তাই প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সশ্ভাবনা বেশী।।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন বলেন, মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা আবার দরপত্র আহবানের প্রক্রিয়া এগুচ্ছেন। প্রকল্পের মেয়াদ আছে ২০২৫ সালের ডিস্বেও পর্যন্ত। এরমধ্যে নুতন দরপত্র দিয়ে কাজ বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন।তাই প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

Leave a Reply