শরীয়তপুর-ঢাকা রুটের একের পর এক পরিবহন বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ, জনমনে ক্ষোভ

Social Share Now



পদ্মা সেতুর চালু হওয়ায় শরীতপুর-ঢাকা রুটে বাস সার্ভিস চালু করেছে বিআরটিসি ও বিভিন্ন প্রাইভেট পরিবহন। তবে এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শরীয়তপুরবাসি। সোমবার ঢাকা থেকে “শরীয়তপুর পরিবহন” নামে একটি পরিবহনের ২৭টি বাস শরীয়তপুরে আসলে ওইসব বাস ও আটকে দেয় ওই সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপ আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই পরিবহনের পরিচালক আসাদুজ্জামান এরশাদ। এর আগে রোববার বিআরটিসি ৮টি বাস আটকে দেয় মালিক গ্রæপ। সোমবার বিকালে শর্তসাপেক্ষে শরীয়তপুর সদর ব্যতিত তিনটি উপজেলায় চালু করার সিদ্বান্ত নেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৫ জুন পদ্মাসেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।২৬ জুন থেকেসেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চালু করা হলে সকালে বিআরটিসির ৮টি গাড়ি ঢাকা থেকে শরীয়তপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। আসার পথে শরীয়তপুরের প্রেমতলা ও বাস টার্মিনাল এলাকায় আসতে না আসতেই বন্ধ করে দেয় শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপ। এসময় গাড়িতে থাকা যাত্রীদেরকে ও জোর করে নামিয়ে দেয় তারা।সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সাথে বৈঠকের পর শর্তসাপেক্ষে শরীয়তপুর সদর ব্যতিত তিনটি উপজেলায় বিআরটিসি বাস চালু করার সিদ্বান্ত নেয়া হয়।
পুনরায় মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকালে “শরীয়তপুর পরিবহন” নামে একটি পরিবহনের ২৭টি বাস শরীয়তপুর সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপ আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই পরিবহনের পরিচালক আসাদুজ্জামান এরশাদ। শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপ “শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস” নামে নুতন করে একটি পরিবহন চালু করছে। এতে তারা ননএসি বাস ভাড়া নিচ্ছেন ২৫০টাকা। আর শরীয়তপুর পরিবহন সরকার নির্ধারিত ভাড়া ২২৫ টাকা নেওয়ার সিদ্বান্ত নেয়। বিআরটিসি এসি বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে শরীয়তপুর সদর থেকে ৩০০ টাকা ও নড়িয়া, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ ৩৫০টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন মালিকদের দাবি, শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপের কথা মতো কতৃপক্ষ বাস ভাড়া না বাড়ানোর কারণেই তারা ওইসব পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে।
এ দিকে খোজ খবর নিয়ে জানাগেছে স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম না বলা শর্তে জানান শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপের প্রতিষ্ঠিত “শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস” এর সাথে একজন সংসদ সদস্য ও একাধিক মেয়র এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা জড়িত থাকায় তাদের ব্যবসা প্রসার করার জন্য বিআরটিসি ও অন্যান্য পরিবহন চলতে দিতে বাধার সৃষ্টি করছেন। এ ব্যাপারে অনেকেই ভয়ে মুখ খুলছে না। এনিয়ে শরীয়তপুরে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভের বহিপ্রকাশ ঘটে। এছাড়াও “শরীয়তপুর-ঢাকা রুটে বিআরটিসি বাস বন্ধ করে দিল পরিবহন মালিকরা” জাতীয় একটি অনলাইন পোর্টালের নিউজ প্রকাশ হলে বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর টিভিতে টকশোতে উপস্থাপক ফারজানা রুপা ও বিআরটিসি’র কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপের সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদারকে নাস্তানাবোধ করে। একটি সূত্রের দাবি, শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপের সঙ্গে সমন্বয় না করে কেউ বাস চালাতে পারবে না। তবে ভয়ে মুখ খুলতে রাজি হচ্ছে না স্থানীয়রা। জনগণের দাবি, পরিবহন সিন্ডিকেট মুক্ত হোক শরীয়তপুর।জনসাধারন পদ্মাসেতুর সুফল ভোগ করুক।
এব্যাপারে শরীয়তপুর পরিবহনের পরিচালক আসাদুজ্জামান এরশাদ বলেন, আমরা রুট পারমিট নিয়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় বাস সার্ভিস চালু করেছি। কিন্তু শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপ আমাদের বাস আটকে দিয়েছে। কারণ, তাদের কথা মতো আমরা বেশি ভাড়া আদায় করিনি। আমরা এর প্রতিকার চাই। যাদের রুট পারমিট আছে, সবাই ব্যবসা করুক। যাত্রীদের যে বাস পছন্দ তারা সেই বাসে চলাচল করুক।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপের সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার (০১৭১৩-৫৬৮৭৯৮) এর মুঠোফোনে ফোন করার পর ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলছি বলে ফোন কেটে দেন। এরপর তার বক্তব্যের জন্য বারবার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, বিআরটিসি ও শরীয়তপুর সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপের সাথে আমাদের সভা হয়েছে। এতে সিদ্বান্ত হয়, আগামী এক মাস বিআরটিসি’র ৬টি বাস শরীয়তপুরে তিনটি উপজেলায় চলাচল করবে। তারা শরীয়তপুর সদর থেকে যাত্রী উঠাতে পারবে না। আগামী একমাস পর আবার সভা হবে। সেখানে পরবর্তী সিদ্বান্ত নেয়া হবে।

Leave a Reply