ভুয়া আমমোক্তার নামার মাধ্যমে ঢাকার গুলশান এলাকায় ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দের মামলায় ৫ বছরের
কারাদন্ড প্রাপ্ত ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন ৬ মাসের জন্য মঞ্জুর করে আদেশ দেন।২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল ভূমি মন্ত্রণালয়ের তখনকার প্রশাসনিক কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদকে রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতিদমন কমিশন (দুদক)। এর আগে রাজধানীর গুলশান থানায় কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মির্জা জাহিদুল আলম।কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধ অভিযোগ, তিনি সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্তে¡ ও ভুয়া আম মোক্তারনামার মাধ্যমে গুলশানে ১০ কাঠার একটি প্লট তার শ্বশুরসহ কয়েকজনের নামে বরাদ্দ করেন। শ্বশুর ও স্বজনদের নামে অভিজাত এলাকা গুলশানে সরকারি ১০ কাঠা জমি ক্রয় দেখিয়ে নিজেই বসবাস করার অভিযোগে ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল গুলশান থানায় কুতুবের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই মামলায় কুতুবের সঙ্গে নাজমুল ইসলাম সাঈদকেও আসামি করা হয়। একই বছরের ১২ এপ্রিল কুতুবকে বরখাস্ত করে আদেশ জারি করে ভূমি মন্ত্রণালয়।
সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুতুব গুলশানে রাজউকের অধিগ্রহণ করা সাড়ে ১৬ শতাংশ (১০ কাঠা) জমি শ্বশুর ও অন্যদের নামে ক্রয় দেখিয়ে আত্মসাৎ করার বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।১৯৬৪ সালে গুলশান-বারিধারা আবাসিক মডেল টাউন সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩১ একর ১৪ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে এই জমি নিচু জলাশয় হওয়ায় রাজউকের জন্য অলাভজনক হবে বলে ১৯৬৯ সালে এ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। এরপর রাজউক পুনরায় ওই ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে এ নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলে। এরপর ২০০৪ সালে উচ্চ আদালতের এক রায়ে ওই ভূমির ওপর রাজউকের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে, কুতুব ভূমি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থেকে প্রভাব বিস্তার করে কৌশলে এক গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে রাজউকের সম্পত্তি অবমুক্ত করে নাজমুল ইসলাম সাইদকে জমির ভুয়া আমমোক্তার সাজিয়ে এবং শ্বশুর আব্দুল জলিল মৃধাসহ আরও দুজনকে ক্রেতা সাজিয়ে নিজেই ১০ কাঠা জমি আত্মসাৎ করেন।তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, কুতুবের শ্বশুর আব্দুল জলিল মৃধার নামে ওই জমি ক্রয় করা হলেও তিনি কখনই এই জমি ভোগদখল বা বসবাস করেননি। শুরু থেকেই কুতুব এই জমি ভোগদখল এবং সেখানে সপরিবারে বসবাস করছিলেন।