জাজিরায় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে অসহায় পরিবারের জমি  জবর দখলের পায়তারার অভিযোগ

জাজিরায় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে অসহায় পরিবারের জমি জবর দখলের পায়তারার অভিযোগ

Social Share Now

জাজিরা উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা এলাকায় প্রভাবশালী মায়া বেপারী অসহায় পরিবারের জমি জবর দখল করার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভুগীরা। এ ঘটনায় পদ্মাসেতু দক্ষিন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ কার্যকরী কোন ব্যবস্থা না নিয়ে আদালতের স্মরনাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেয়। জমির মালিকগন অসহায় । তারা প্রশাসনের কাছে আইনগত সহায়তা চায়। মায়া বেপারী বলছেন সে তার জমিতেই বেড়া দিয়ে মাটি ভরাট করছেন । অন্যের জমিতে মাটি ভরাট করছেনা। পুলিশ বলছে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ তারা কিছু করতে পারবেন না। তাই আদালতের স্মরনাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে ও পদ্মা দক্ষিন থানা জানায় , জাজিরা উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা গফুর মুন্সি কান্দি গ্রামের অসহায় মমতাজ বেগম এর পৈত্রিক সম্পত্তি ও আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এর ক্রয়কৃত সম্পত্তি । আনোয়ার হোসেন হাওলাদার একই এলাকার জবেদা বেগম ও তার মেয়ে কাঞ্চন বিবি গংদের নিকট থেকে ক্রয় করেছেন। আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ১০২ নং পশ্চিম নাওডোবা মৌজার ১৬৭ নং বিআরএস খতিয়ানের ২১৪২ও ২৪৫৬ নং দাগে ৭৫ দশমিক ৫ জমি ক্রয় করে ঐ জমিতে গাছপালা লাগিয়ে ভোগ দখল করে আসছেন। মমতাজ বেগম গং পৈত্রিক সম্পত্তি ২১৪১ ও ২১৩৫ নং দাগে ৫৮.৫ শতাংশ জামি । তরা দীর্ঘদিন যাবত ভোগ দখল করে আসছেন। তার বাবা খোরশেদ আলী মৃত্যুর পর ওয়ারিশগন এ জমি ভোগ দখল করছেন। এখানে উল্লেখ থাকে যে, ১৬৭ নং খতিয়ানের উল্লেখিত দাগে মালিক সংসের আলী । তার মৃত্যুর পর তার ছেলে আরশেদ আলী ,খোরশেদ আলী ও মেয়ে বর্না বিবি মালিক হন। উক্ত জমি থেকে বর্না তার পাওনা ৩৬ শতাংশ জমির থেক্যে তারই ভাই আরশেদ আলীর নিকট ১৬.৫ বিক্রি জমি করে দেয় । বাকি ১৯.৫ শতাংশের মধ্যে আবার আঃ রব সেক এর কাছে ১৬.৫ বিকি করে দেন। কাগজপত্র অনুযায়ী বর্নার মাত্র ০৩ শতাংশ জমি অবশিষ্ট থাকে। ঐ জমির তিন পাশ তিনটি রাস্তার জন্য সরকার এ দাগের ১৩ শতাংশ জমি অধিগ্রহন করে নেয়। এতে করে বর্না আর কোন সম্পত্তি থাকেনা। বরং তিনি অতিরিক্ত বিক্রি করেছেন বলে প্রমানিত হয়।
এখানে বলাবাহুল্য যে, বিআরএস জরিপে সংসের আলীর ছেলে আরশেদ আলী, খোরশেদ আলী ও বর্নার নামে রেকর্ড হয়। বর্না ঐ রেকর্ড বলে জমি তার ভাই আরশেদের কাছে ১৬.৫ বিক্রি করে। আরশেদ আলী জমি কেনার পরে নুতন করে নামজারী বা মিউটেশন করেনি। বর্নার নামে বিআরএস রেকর্ড থেকে যায়। বর্নার মৃত্যুর পর ছেলে মেয়ে অর্থা হাফেজ মাদবর গং বিআরএস রেকর্ড বলে ঐ জমি থেকে .১২ শতাংশ জমি লুৎফর সেক এর কাছে বিক্রি করে দেয়। লুৎফর সেক পরে ঐ জমি শিবচর উপজেলার জনৈক মায়া বেপারীর নিকট বিক্রি করে দেয়। যদিও উল্লেখিত দাগ ও খতিয়ানে বর্নার কোন সম্পত্তি নেই। তাই এ দলিল এর কোন বৈধতা নেই। অথচ প্রভাবশালী মায়া বেপারী স্থানীয় কতেক টাউট বাটপার ও প্রভাবশীলীদের সহযোগিতায় বিবাদমান জমিতে প্রায় ২০/২৫ শতাংশ জমি জুড়ে বাশ ও কাঠের খুটি দিয়ে বেড়া দিয়ে বালু ফেলে জবর দখল করার জন্য পায়তারা করছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও মমতাজ বেগম ও তার ভাই বোনেরা। এ বেড়া দেয়ার সময় আনোয়ার হওলাদার ও মমতাজ বেগম গং বাধা দিলে মায়া ও তার সহযোগী কতেক সন্ত্রাসী হুমুকি দেয় যে জমিতে বাধা দিতে আসলে জীবনে শেষ করে লাশ করে ফেলবে। ভুক্তভোগীরা স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার দের কাছে বিচার চেয়ে ও কোন সমাধাধান না পেয়ে অবশেষে পদ্মা দক্ষিন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে ও প্রভাবশালীদের তোপের কাছে কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। বরং ভুক্তভোগীদেরকে আদালতে নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করতে বলে। জমির মালিক গন শংকিত। প্রভাবশালী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা তাদের জমিতে অবৈধ ভাবে জবর দখল কেরে বাড়ি ঘর করতে পারে এবং এ ঘটনায় বাধা দিলে জানমালের ক্ষতি হতে পারে। তাই তারা প্রশাসনের কাছে সাহায্য চান।
এ ব্যাপারে মমতাজ বেগম বলেন, আমি খোরশেদ আলীর মেয়ে। আমরা ৬ বোন ও ২ ভাই। আমার বাবার মৃত্যুর পর এ সম্পত্তির মালিক হয়েছি। এ জমি আমরা দীর্ঘদিন যাবত ভোগ দখল করে আসছি। মায়া বেগম একটি ভুয়া দলিল করে আমাদের জমি সহ অন্যান্য লোকের জমি জবর দখল করার পায়তারা করছে। আমরা অসহায় পরিবার প্রশাসনের কাছে সহয়তা চাই।
আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন,আমি তফসিল বর্নিত দাগ ও খতিয়ানে ৭৫.৫ শতাংশ জমি ২০১১ সালে খরিদ করে ভোগ দখল করে আসছি। মায়া বেপারী বর্নার সন্তানদের থেকে একটা ভুয়া দলিল করে আমাদের জমি জবর দখল করার পায়তারা করছে। আমি কোথাও বিচার না পেয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ প্রভাবশালীদের কাছে অসহায় হয়ে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদেরকে আদালতের স্মরনাপন্ন হতে বলে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।
স্থানীয় নাওডোবা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার কামাল বেপারী বলেন, এ জমি আনোয়ার হাওলাদার ও মমতাজ বেগমগং দের। মায়া বেপারী একটি ভুয়া দলিল করে জবর দখল করতে বেড়া দিয়ে মাটি ভরাট করার পায় তারা করছে। আমরা স্থানীয় ভাবে মীমাংসা করতে চেষ্টা করেছি। মায়া কাউকেই মানেনা।
এ ব্যপারে মায়া বেপারীর কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে প্রথমত তিনি নিজেকে মায়া না বলে অস্বীকার করেন। পরে বলেন আমি অসুস্থ। তিনি এ প্রতিবেদকে বলেন আমি কারো জমি দখল করে মাটি ভরাট করছিনা। আমার জমিতে মাটি ভরাট করছি। মেয়ে মানুষ কারো জমি দখল করতে পারেনা । ওরা জমি পেলে নিয়ে যাবে।
পদ্মা দক্ষিন থানার উপ-পরিদর্শক ফিরোজ আল মামুন বলেন,আমাদের থানায় আনোয়ার হাওলাদার একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত কালে মায়া বেপারী ও ঐ জমির মালিক দাবী করে। জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকায় আমি তাদেরকে আদালতে র স্মরনাপন্ন হতে বলেছি।

Leave a Reply