পদ্মাসেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ভয়াবহ  নদী ভাংগন

পদ্মাসেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ভয়াবহ নদী ভাংগন

Social Share Now

শরীয়তপুর প্রতিনিধি ঃ শরীয়তপুরের জাজিরার মাঝিরঘাট পাইনপাড়া এলাকায় পদ্মাসেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে গত তিনদিন যাবত ব্যাপক নদী ভাংগন দেখা দিয়েছে। পাইনপাড়া সহ ৬/৭টি গ্রামের মানুষ আতংকে দিন কাটছে। তারা বাড়ি ঘর সরিয়ে নিচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে ডানতীর রক্ষা বাধের ভাংগন প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নিলে পুরো এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জিওব্যাগ ডাম্পিং কাজ শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ২কিলোমিটার পদ্মাসেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।এতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা। গত বছরের ৩ নভেম্বর থেকে বাঁধের নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকার ভাংগন শুরু হয়। ১৬ নভেম্বর বিকেল পর্যন্ত বাঁধটির প্রায় ১০০ মিটার ধসে পড়ে নদীতে। এতে কংক্রিটের সিসি বøকগুলো তলিয়ে যায় পানিতে। এছাড়া এলাকার আশপাশে দেখা দেয় ফাটল। পরে বাঁধটির সংস্কারে দায়িত্ব দেওয়া হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। গত বছর ওই বাঁধের যে ১০০ মিটার অংশ বিলীন হয়েছিল তা ২কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ও সিসি বøক ফেলার কাজ শুরু হয়। এদিকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পূর্ব পাশের নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পুরো ২কিলোমিটার রক্ষা বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে নিশ্চিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে গত শনিবার ভোররাতে সংস্কার করা বাঁধের ১০০ মিটার অংশসহ পাশের আরও একটি স্থানে ভাঙ্গন শুরু
হয়। একদিনের মধ্যে বাঁধের ২৫০ মিটার অংশ নদীতে তলিয়ে যায়। ভোরে মাইকে নদী ভাংগনের আওয়াজ শুনে এলাকার লোকজন নদীর পাড়ে চলে আসে। তাৎক্ষনিক ভাবে যে যার মত করে ঘরবাড়ি সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এলাকা পরিদর্শন করে জিওব্যাগ ফেলে ভাংগন রোধ করার জন্য রোবার বিকেল নাগাদ জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু করে। এরই সাথে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি শরীয়তপুর ইউনিটের ভাইসচেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান , রেডক্রিসেন্ট এর সেক্রেটারী সাংবাদিক আবুল হোসেন প্রায় ৩০জন ভলানটিয়ার নিয়ে সেখানে স্বেচ্ছাশ্রেেমর ভিত্তিতে কাজ শুরু করে।এলাকাবাসির দাবী কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে পদ্মাসেতুর পশ্চিম পাশে যেভাবে স্থায়ী বেড়িবাধ দেয়া হয়েছে সেভাবে একটি স্থায়ী বেড়ি বাধ দেয়া হোক।
এ ব্যাপারে স্থানীয় নাওডোবা ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, গত শুক্রবার ভোর থেকে হঠাৎ করে পাইন পাড়া এলাকা ভয়াবহ নদী ভাংগন দেখা দিয়েছে। সকালে মাইকের আওয়াজ শুনে নদীর পাড়ের বাড়ি ঘরের মানুষ সংবাদ পেয়ে নদীর পাড়ে ছুটে আসেন। তড়িঘড়ি করে অনেকেই বাড়ি ঘর সরিয়ে নেয়ার চষ্টা করছে।৬/৭ গ্রামের মানুষ আতংকে আছে। তৎি এ এলাকায় ভাংগন প্রতিরোধের ব্যস্থা করা না হলে এ এলাকার ৬/৭ গ্রামের বাড়ি ঘর সহ বাপ দাদার ভিটে মাটি পদ্মার করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান বলেন, পদ্মাসেতু নির্মান কালীন কনস্ট্রাকশন ঈয়ার্ডেও ডানতীর রক্ষাবাধ তারাই দিয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম। আমাদেরকে দেয়নি। এখন ভাংগন দেখা দেয়ার পর বলছে আমাদেরকে মেরামত করতে। নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধিও ফলে এ ভাংগনের সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা এলাকায় এসে ভাংগন প্রতিরোধের জন্য জিওব্যাগ ডাম্পিং এর কাজ শুরু করছি। তবে ঈদের ছুটির কারনে লেবার সংকট। আমরা চেষ্টা করছি ভাংগন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে।
শরীয়তপুর জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি শরীয়তপুর ইউনিটের নবনিযুক্ত ভাইসচেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমান বলেন,নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা আবশ্যক। এ কারনে নুতন চ্যনেল তৈরী করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। তানালে নদীতে আরো পানি বৃদ্ধি পেলে ভয়াবহ ভাংগনের রুপ নিতে পারে। ভাংগন প্রতিরোধে আমরা রেডক্রিসেন্ট ও বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছি। সরকারের কাছে দাবী জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে।

Leave a Reply